বাংলা ভাষা - শিবলি আজাদ।

এক,

বাংলা ভাষা দুর্বল, তার চিন্তাশক্তি নেই, তার শব্দসম্ভার কম, তার ফ্ল্যেক্সিবিলিটি নেই, বাংলাতে লিখতে গেলে টেকনিক্যাল বা পরিভাষা পাওয়া যায়না, এমনতর অভিযোগ বহু পুরনো, এবং ক্ষেত্র বিশেষে, এ ধরণের আক্ষেপ সঠিক ও বাস্তব হলেও সামগ্রিক বিচারে এসব অভিযোগ ঠুনকো অজুহাত মাত্র। এসকল অভিযোগ বা বক্তব্যের অর্থ এই নয় যে, বাংলা ভাষাটাই দায়ী; এর অর্থ হল, বর্তমান সময়ে বরং এই ভাষা ব্যাবহারকারীদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও ভাষার প্রায়োগিক বিষয়গুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব কিছু সমস্যা রয়েছে, ভাষার নয়, যে সমস্যা আবার জনগোষ্ঠী হিশেব তাদের সাম্প্রতিক ম্যাটেরিয়াল জীবনের দৈন্য নির্দেশ করে। বাংলা ভাষা নিজে কোন সমস্যা নয়, যদি এমন হত যে বাংলাভাষীরা খুবই প্রতিভাবান, ফুটন্ত মেধার কারণে ছটফট করছে, কিন্ত দুর্বল বাংলা ভাষার জন্য তারা ভাব প্রকাশ করতে পারছে না, সেক্ষেত্রে বাংলাভাষীরা অন্তত ইংরেজিতে লেখে দুনিয়া কাঁপাতে পারতো, যেহেতু, শিক্ষিত সকল বাংলাভাষী কমবেশী ইংরেজি জানেন। কিন্ত, সেটাওতো হচ্ছে না। এ কথা সতঃসিদ্ধ যে, উন্নত জনগোষ্ঠীর ভাষা উন্নত হতে বাধ্য, মানব ইতিহাসের কোন কালপর্বে এমন ঘটনা ঘটেনি যে, ভীষণ উন্নত একটি জাতির ভাষা অনুন্নত ছিল, বা আছে। ইতিহাসের সকল কালপর্বে, বিশ্বকে নেতৃত্বদানকারী সকল জাতির ভাষা ছিল তার সময়ের সবচেয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধতম ভাষা; যে জাতি যখন যত উন্নত, তার ভাষাও তখন তত উন্নত। এর কোন ব্যাত্যয় নেই।

দুই,

মনে রাখতে হবে, ভাষা আপনা আপনি তৈরি হয় না, উন্নত ভাব প্রকাশের বাহন হয় না; একটি ভাষা উন্নত হয় ঐ ভাষা ব্যাবহারকারীদের জন্যে। ইংরেজি বা অন্যান্য ইউরোপীয় ভাষা আজ উন্নত (যেমন অতীতে ছিল গ্রীক, ল্যাটিন, সংস্কৃত, ম্যান্ডারিন, বা নিকট অতীতে আরবী, ফার্সি, কিংবা ক্ষেত্র বিশেষে উর্দু), যেহেতু হাজার বছর ধরে এই ভাষাগুলোর ব্যাবহারকারীরা, এবং এসব জনগোষ্ঠীর শ্রেষ্ঠ প্রতিভাবানেরা এসকল ভাষাকে তাদের ভাব প্রকাশের বাহন হিশেবে ব্যাবহার করেছেন এবং এখনো করছেন। ফলে, বিচিত্র লঘুগুরু ভাব প্রকাশের জন্য এসকল ভাষা যথার্থভাবে বিকশিত হয়েছে। নিজস্ব সামাজিক বিকাশের দুর্বলতার জন্য, বাংলার শিক্ষিত জনগোষ্ঠী শুরু থেকেই ইংরেজি নির্ভর; সবচে বড় কথা, অন্যান্য জাতির মত নিজ জনগোষ্ঠীর এই দুর্বলতাকে ওভরকাম করার কোন সচেতন প্রয়াসও তারমধ্যে নেই; এই প্রচেষ্টাহীনতা, আমার মতে, এই জনগোষ্ঠীর নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য; যা হবার হবে, যেভাবে চলছে চলুক, আমার কী আসে যায়, এমনতর মানসিকতার জনগোষ্ঠী বাঙ্গালীর মত আর দুটি নেই এই দুনিয়াতে।

তিন,

বাংলা দুর্বল ভাষা, এ ধারণা বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কে বোধশক্তিহীন অর্বাচীনের বক্তব্য; সমস্য হল, গত পঞ্চাশ বছর ধরে বাঙলাভাষী এলিটরা তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ও রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বকে ভাষার দোষ বলে বিশ্বাস করা শুরু করেছে। যদি বাঙলা গদ্যের খবর নেই, বিশেষ করে এর বুদ্ধিবৃত্তিক ও তাত্ত্বিক লেখাজোখার, তবে মনে রাখতে হবে, এই ভাষায়, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তরকালে, গত কয়েক দশকে সুকুমারী ভট্টাচার্য, অশীন দাশগুপ্ত, রণজিৎ গুহ, সুমিত সরকার, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, গৌতম ভদ্র, দীপেশ চক্রবর্তী, আদিত্য মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম চক্রবর্তী, পল্লব দাশগুপ্ত, অমল বন্দোপাধ্যায়, অমিয় বাগচী, কৌশিক বসু, প্রমুখ গভীর তাত্ত্বিক আলোচনা করেছেন এবং করছেন; এরা সকলেই বিশ্ববিখ্যাত সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন, সেসকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন, কিংবা এখনো পড়ান; এবং ইংরেজিতে লিখেই তাত্ত্বিক হিশবেই প্রথমে তারা জগতবিখ্যাত হয়েছেন।

একই কথা বলা চলে এঁদের পূর্বসূরিদের সম্পর্কে; অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্য যে, উনবিংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকেও বাংলায় প্রবন্ধ ও গবেষণাপত্র লিখেছেন এমন অনেক প্রতিভা ছিলেন বিশ্বমাপের। অনেক অনেক নামের ভিড়ের মধ্যে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত, ব্রজেন শীল, বিনয়কুমার সরকার, ক্ষিতিমোহন সেন, হরিদাস ভট্টাচার্য, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, নীহাররঞ্জন সরকার, শঙ্করী প্রসাদ বসু, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, হুমায়ন কবির, বিমল কৃষ্ণমতিলালের মত আরও কয়েক ডজন নাম নেয়া যায়, যারা সবাই তাদের তীক্ষ্ণ মেধার জন্যে এবং নিজ নিজ বিষয়ে মৌলিক গবেষণামুলক অবদান রাখার জন্যে আন্তরজাতিক ভাবে খ্যাত। অর্থাৎ, ভাষার সমস্যা নেই, বাঙলাতে যেকোনো জটিল তাত্ত্বিক আলোচনা সম্ভব। এখন শুধু প্রয়োজন নির্মোহ ও নৈর্ব্যক্তিক ডিসক্যার্সিভ বাংলা গদ্য লেখার ধারাক্রম তৈরি করা ও সেই ধারাকে বলবান করার জন্য বাংলায় বিষয়ভিত্তিক প্রফেশনাল জার্নাল বের করা, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা লিখবেন নিজেদের তাত্ত্বিক সম্প্রদায়ের জন্য। যত বেশি বেশি লেখা হবে, ভাষা তত বেশি বিকশিত হবে।

চার,

পরিভাষার সমস্য? প্রশ্ন হল, পরিভাষা তৈরির প্রয়োজনীয়তা কী ? আর সেটা করবেই বা কে? তার সার্বজনীন গ্রহনযোগ্যতা দেবে কে ? ফ্রান্সের একাদেমি ঐতিহাসিক ভাবে একাজ করে এসেছে, ফরাসি ভাষার জন্য; ফরাসি ইতিহাসের জগতবিখ্যাত ব্যাক্তিরা এই কাজে ব্যাপৃত ছিলেন বলে ওই অ্যাকাদেমির গ্র্যাহ্যতা ছিল এবং ফরাসি ভাষা রেগুলেট করতে তারা সফল হয়েছিল। অর্থাৎ, যোগ্যতা ও ঐতিহ্যের সমন্বয়ের কারনে ওই আকাদেমি সফল হলেও, বাংলায় তা ব্যর্থ হয়েছে ঠিক এই দুই গুনের অনুপস্থিথির কারনে। অপদার্থ আর মূর্খের আস্তানা বাংলাদেশের বাংলা একাদেমি। পশ্চিম বঙ্গের বাংলা একাদেমি বিখ্যাত তার রাবীন্দ্রিক গদাইলস্করী চালের জন্য; আর বাংলাদেশেরটা তাদের আকাশচারী গণ্ডমূর্খতার জন্য। এতএব, এদের কাজের কোন সার্বজনীন গ্রহনযোগ্যতা আগে যেমন ছিলনা, আজও তেমনি নেই, এবং ভবিষ্যতেও যে থাকবে না, তা হলফ করে বলা যায়; কেননা, সুশিক্ষিত লোকেরা এসকল সরকারী নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে আসবে না, আসতে পারবে না, বা সহজ করে বললে, তাদের আসতে দেয়া হবে না। সেটাই ভাল, এতে বাংলা ভাষা রেগুলেশনের জঞ্জাল আর আপদ মুক্ত থাকলো।

তো কী করবে বাংলা ভাষা? উত্তর খুবই সোজা—সে চলবে তার আপন স্বভাবে। ইংরেজি ভাষার বৈশিস্ট্য হোল অন্য ভাষার শব্দ দ্রুত আত্তীকরন করা, বাংলা ভাষাও তা করে থাকে, তবে ইংরেজির মত অতো দ্রুত নয়; বেচারার হজম শক্তি একটু দুর্বল, তাই একটু সময় নেয়, তবে সবই হজম করে ফেলে, সর্বভুক এই ভাষা। কে আজ খবর রাখে যে, স্বয়ং “খবর” শব্দের উৎপত্তি আরবী, বা “কলম” কিংবা “বই” আদতে আরবী শব্দ? “দাদা-নানা” তুর্কী ? গরমের দিনে ফালুদা খান? আর শীতে গরম গরম ফিরনী ? তবে জেনে রাখুন, “ফালুদা” ফার্সি আর “ফিরনী” তুর্কী শব্দ; খানাপিনার (কী সুন্দর উর্দু–ফার্সির যুগলবন্দী) কথাই যখন এলো, তখন যেনে নেয়া ভাল যে, আজকাল অনেকই প্রগতির আশায় কিংবা নিরেট আমোদ করার জন্যে ইংরেজির আশ্রয় নিয়ে একটু-আধটু “ড্রিঙ্ক” করে থাকেন, হোক সে দেশী ধেন্যু কিংবা বিলাতী হুইস্কী। আবার দেখুন, ছোট ভাইয়ের সাথে মারামারীতে পারছেন না, আব্বাকে ডাকবেন ? আরে বাবা, “আব্বা” শব্দটাতো হিব্রু!

বলাবাহুল্য, বাংলা ভাষার দশ শতাংশ শব্দ এভাবেই বিদেশী ভাষা থেকে এসেছে, তো আরো আসতে অসুবিধা কী? আসলে সমস্যাটা আমাদের, যে সমস্যাটা আসলে কৃত্তিমঃ দৈনন্দিন জীবনে মুখের কথায় আমরা প্রচুর সমসাময়িক ইংরেজি শব্দ ব্যাবহার করলেও, লেখার সময় থাকি কুণ্ঠিত; যদিও, অনেক পুরনো আত্তীকৃত শব্দ না জেনে ব্যবহারে আমাদের কোনই আপত্তি নেই। ভাষার ছুঁচিবায়ুগ্রস্ততা মুলত গণ্ডমূর্খতা, এটা কুপমন্ডুকতার আরেক নাম। যা করণীয়, তা হোল কাণ্ডজ্ঞান বজায় রাখা, এবং যে শব্দই প্রয়োজন, তা চোখ-কান বুঝে বাংলাতে ব্যাবহার করা, হোক সে যেকোনো ভাষার শব্দ। উচ্চশিক্ষায় এক্ষেত্রে ইংরেজি টেকনিক্যাল টার্ম বা শব্দগুলো যথা সম্ভব আত্তীকরণ করে বাংলা হরফে লিখে নিলেই চলবে; বহুল ব্যবহারে, ধীরে ধীরে সেসকল শব্দের পরিচিতি লাভ ঘটবে; একটু সময় লাগবে, কিন্তু, হবে। আরেকটা কথা, উচ্চশিক্ষার টেকনিক্যাল শব্দ শুধু ঐ বিষয়ের ছাত্রশিক্ষক আর পেশাজীবীদের প্রয়োজন, আমজনতার সেসব শব্দ বোঝার প্রয়োজন নেই (যদি না সে সে বিষয় শিখতে চায়) বলে উচ্চশিক্ষার টেকনিক্যাল শব্দের অতিসরলীকরণ অপ্রয়োজনীয়।

পাচ,

বাঙালীর বাংলা ভাষা ব্যবহার করার প্রবণতার তুলানায় মার্কিনীদের ইংরেজি ভাষার ভাংচুর করার প্রবণতা তফাত করতে গিয়ে বিবেকানন্দ বলেছিলেন যে, জ্যান্ত মানুষের ভাষা হয় জ্যান্ত; বিবেকানন্দের মতে, মার্কিনীরা জ্যান্ত, বাঙালীরা মরা। বিবেকানন্দকে ধার করে আমিও বলি, আজকের দিনে অনেকের আধুনিক গদ্যের বাংলা মৃতবৎ এ জন্য যে, বাংলাভাষী অধিকাংশই আসলে মনের জগতে এক একজন মৃত সত্ত্বা; মড়ার ভাষা তো আড়ষ্ট হবেই।

ছয়,

বাংলা ভাষায় চিন্তাচর্চার বাধ তখনই ভাঙ্গবে যখন ইংরেজি, ফরাসি, বা জার্মানের মত এই ভাষায় চিন্তাচর্চার বানিজ্যিকরন হবে। ঘাবড়াবেন না। চিন্তার বানিজ্যিকরন মানে নোটবইয়ের বন্যা বা কোচিং সেন্টারের প্রাদুর্ভাব না, এর মানে লেখাপড়ায় প্রফেশনালিসমের বিকাশ—ব্যাপক পড়াশোনা, গবেষণা, চিন্তাভাবনা, জর্নলে গবেষণা প্রবন্ধ ছাপানো, আর বই লেখা, যার ইনকাম দিয়ে একজন লেখক জীবন ধারন করে থাকে এবং পাঠক সে লেখা পড়ে জানে, বুঝে, শিখে। ভাবুক, কবি, বা লেখক না খেয়ে কষ্ট করবে, বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে, তার সংসার উচ্ছনে যাবে, তার স্ত্রী-সন্তানরা পথে বসবে, আর আমরা উহু আহা করব, আর আলু-ফালুরা সমাজ চালাবে, এই চিন্তাটা অস্বাভাবিক, অপ্রাকৃতিক, ও মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ। সব উন্নত দেশেই ভাল লেখকরা বই লিখে প্রচুর ইনকাম করেন; প্রকাশক আগাম টাকা দেন, ছয়-সাত ডিজিটে, যা সারা জীবনের জন্য জীবন ধারণের পক্ষে যথেষ্ট; এজন্য, এরা কয়েক বছর ধরে গবেষণা করে তারপর লেখেন এবং এজন্য এদের প্রতিটা লেখাই অসাধারণ । বছরে ১৪/১৫ টি বই লিখতে হলে, আর যাই হোক, মান রক্ষা হয় না, বরং দাউদকান্দীর মলমের মত একটা কিছু হয়, সাময়িক তৃপ্তি হলেও তাতে চূড়ান্ত তৃষ্ণা মেটে না, বা কাজও উদ্ধার হয় না। তেমনি, সকল, বিশেষ করে, বেশী সফল অধ্যাপকেরাও, বই লিখে বিপুল উপার্জন করতে সক্ষম বলেই নিবিষ্টমনে গভীর ও ব্যাপক গবেষণায় তারা জীবন পার করতে পারেন।

এ ব্যাপারে একটু ব্যাক্তিগত প্রসঙ্গের অবতারণা করছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সকল শিক্ষকই ইউনিভারসিটির বেতন ছাড়াও যে টাকা রয়্যালটি থেকে পেতেন, তার পরিমাণ শুনলে আক্ষরিক অর্থেই চোখ গাছে উঠবে। আমার সরাসরি দুই শিক্ষক নোবেল প্রাইজ পাবার আগেই বছরে ৫/৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী করে কামাতেন; এদের একজন, জোসেফ স্টিগল্টীযকে ২০০১ সালে বিশ্বখ্যাত পাবলিশার নর্টন কয়েক মিলিয়ন ডলার আগাম দেয়, গ্লোবালাইজেশন নিয়ে তিন খণ্ডে বই লেখার জন্য। তার তিন খণ্ডের সেই বই (Globalization and Its Discontent, The Roaring Nineties, and Making Globalization Work) আজ ক্ল্যাসিক বলে গন্য। টাকা যেখানে আছে, সেখানে ধীরে হলেও, কোয়ালিটি আসতে বাধ্য; পয়সা দিয়ে কেউ বাজে জিনিষ নেয় না; আর বারবারতো ভুষিমাল দিয়ে সবাইকে বোকা বানানো সম্ভব না। অর্থাৎ, লেখাটাও হতে হবে পুজির নিয়ম মেনে, পুঁজিবাদের নিয়মই হোল প্রতিযোগিতা, শ্রেষ্ঠত্বের সাধনা, কেননা শ্রেষ্ঠরাই টিকে থাকে বাজারে; অতএব, সেটাই কাম্য বাঙলার ক্ষেত্রেও। বাঙলীরা মানবরীতির বাইরে নয়, বাংলাভাষাকেন্দ্রিক সাহিত্য, ফিকশন কী নন-ফিকশন, লঘু কী গুরু, তাই পুজির বাইরে থাকতে পারে না।

সাত,

আবারও বিবেকানন্দঃ জ্যান্ত মানুষের ভাষা হয় জ্যান্ত; বাঙলাভাষী, তুমি কী জ্যান্ত ?

লেখক ঃ শিবলি আজাদ